আমের পুষ্টিগুণ: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ক্যামিকালমুক্ত আম খান

বছরজুড়ে অপেক্ষার প্রহরশেষে বাংলাদেশের বাজারে ইতোমধ্যে গাছপাকা রসালো আম ওঠা শুরু হয়েছে। আম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, সাতক্ষীরা, রাজশাহী বা চুয়াডাঙ্গার পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুপরিচিত নানা জাতের আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে।

সকাল-বিকালের নাশতা কিংবা দুধ-ভাতের সঙ্গে একটি পাকা আম বাঙ্গালীদের এক প্রাচীন ঐতিহ্য!! এটা ছাড়া যেন খাওয়ার পূর্ণতাই আসে না। পাকা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ, আয়রন, ফসফরাস, ভিটামিন সি, রিভোফ্লেভিন, থায়ামিন ইত্যাদি, যা আমাদের দেহের জন্য অনেক উপকারী।

এছাড়াও পাকা আমে রয়েছে দারুণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা- চলুন জেনে নেই সেগুলো।

কোলেস্টেরল কমায়:

ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন থাকায় রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে রসাল পাকা আম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম কোলেস্টেরল কমাতে কাজ করে ফলে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরিমিত পরিমাণ আম খেতে পারেন।

ক্যানসার প্রতিরোধে আম:

পাকা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্টস, কোয়েরসেটিন, ফাইসেটিন, আইসোকোয়েরসেটিন, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, গ্যালিক অ্যাসিড, মিথাইল গ্যালেট ইত্যাদি উপাদান; যা কোলন, স্তন, প্রস্টেট, লিউকেমিয়া প্রভৃতি ধরনের ক্যান্সার ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরকে রক্ষা করে। তাই ক্যানসার প্রতিরোধে পরিমিত পাকা আম খেতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:

আমে থাকা ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ ও প্রায় ২৫ ধরনের ক্যারোটেনয়েডস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে, আমে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে ও চোখের চারপাশের শুষ্কভাবও দূর করে। তাই যারা চোখের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আম একটি উপকারী খাবার। নিয়মিত এই ফল খেলে চোখ ভালো রাখা সহজ হয়। এছাড়াও গ্রীষ্মে শরীরকে অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করে।

ত্বক ভালো রাখে:

পাকা আম আপনার ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। আমে থাকা উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-সি ত্বকের কোলাজেন তৈরিকে ত্বরান্বিত করে, যা ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ার সমস্যাকে ধীরগতি করে। এছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের ফলিকলকে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে, যা চুল পড়ার হার কমিয়ে আনে। যাদের চুল পড়ার হার বেশি তারা নিয়মিত পাকা আম খেতে পারেন।

অ্যালকালাইন ভারসাম্য:

আমে আছে টারটারিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড। আছে সাইট্রিক অ্যাসিডও। শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখে এটি। পাকা আম আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কারে সহায়তা করে। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকায়, পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন-সি এর পরিমাণ বেশি। যা আমাদের দাঁত ও হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

হিট স্ট্রোকের বিরুদ্ধে লড়াই করে:

গরমে কাঁচা আম খেলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে। ওজন কমায় : দেহের বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঁচা আম। পক্ষান্তনরে আম থেকে তৈরি একটি জুস খেলে তা বাইরের অতিরিক্ত তাপ থেকে শরীরকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং আপনাকে সহজে ক্লান্ত হতে দেয় না।

দ্রুত খাবার হজমে আম:

স্বাস্থ্য ধরে রাখতে হজম প্রক্রিয়া সুস্থ থাকা জরুরি। আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদান সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত, বাঁচা যায় পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও।

One Reply to “আমের পুষ্টিগুণ: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ক্যামিকালমুক্ত আম খান”

Leave a comment